গাইডলাইন কিভাবে মোবাইল অ্যাপ তৈরি এবং আয় করা যায়।
টাইটেলের প্রশ্নটি একটু ভিন্ন রকম। প্রশ্নটি হওয়া উচিত অ্যাপ বা এপস দিয়ে ইনকাম করার উপায়। কিন্তু উপরের প্রশ্নটির উত্তর দুইটি হবে কিভাবে তৈরি হবে অ্যাপস এবং আয়।
আমরা উত্তর কে দুইটি ভাগে ভাগ করে নিবো। প্রথমে অ্যাপ তৈরি করার বেসিক গাইড লাইন, দ্বিতীয় অ্যাপ থেকে আয় করার উপায়।
মোবাইল অ্যাপ কি?
মোবাইল বা অ্যানড্রেয়েড অ্যাপ হল এক ধরনের সফটওয়্যার প্রোগ্রাম, যা অ্যানড্রেয়েড মোবাইলে ব্যবহার করা হয়। অ্যানড্রেয়েড অ্যাপ গুলো ডিজাইন করা হয়ে থাকে অ্যানড্রেয়েড মোবাইল ফোন, ট্যাবলেটের জন্য। App Emulators দিয়ে অ্যাপস গুলো পিসি এবং ল্যাপটপের জন্য ব্যবহারের উপযোগি করা যায়। অ্যানড্রেয়েড অ্যাপ ডেভলোপ করার জন্য জাভা প্রোগামিং ল্যাঙ্গিয়েজ ব্যবহার করা হয়।
অ্যাপ ডেভলোপমেন্ট জন্য অ্যানড্রেয়েড সফটওয়্যার ডেভলোপমেন্ট ( SDK ) টুল দিয়ে করা হয়ে থাকে।
এসপ কেন তৈরি করা হয়?
অ্যাপের অনেক প্রকারভেদ আছে। যেমন, আনন্দ, এনটারটেইনমেন্ট, গেম, টিভি, ইত্যাদি। অ্যাপের উদ্দেশ্য হল একই জায়গায় একই ধরনের সকল সুবিধা দেওয়া। যেমন, আপনি একটি বিউটি অ্যাপ ডাউনলোড করলেন প্লে স্টোর থেকে। এই একটি অ্যাপের মধ্যে আপনি প্রায় সকল ধরনের বিউটি টিপস পাবেন।
অ্যাপস তৈরি করার কমন উদ্দেশ্য হল সহজে গ্রাহক বা পাবলিকের কাছে তথ্য, সার্ভিস, সেবা পৌচ্ছেয়ে দেওয়া।
অ্যাপ তৈরি করে কি টাকা আয় করা যায়?
আপনি বানিয়ে বা তৈরি করে অর্থ আয় করতে চাইলে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট প্লেস গুলোতে কাজ করতে পারেন। অথবা আপনি কোন ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ডেভলোভমেন্ট কোম্পানির সাথে কাজ করতে পারেন।
অ্যাপ ডেভলোপার হওয়া জন্য আপনাকে Java Programming Language জানতে হবে। আপনি চাইলে অনলাইনে অ্যাপ ডেভলোপমেন্টের জন্য কোর্স করতে পারেন।

আমি প্রোগ্রামিং জানি না, আমি কি অ্যাপ তৈরি করতে পারবো?
আপনার প্রোগ্রামিং জানা না থাকলেও আপনি অ্যাপ তৈরি করতে পারবেন। অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইট আছে যারা কাস্টমাইজ অ্যাপ তৈরি করা সুযোগ করে দিয়ে থাকে। আপনি ইচ্ছামত প্রয়োজনীয় বিষয় বাছাই করে যোগ করতে পারবেন।
কাস্টমাইজ কি? কাস্টমাইজ হল সাজিয়ে নেওয়া। যেমন এক জায়গায় ভাত, ডাল, মাছ, মাংস, সবজি সব কিছু রান্না করে দেওয়া আছে আপনি শুধু সেই একটি প্লেটে আপনার পছন্দ অনুযায়ি খাবার গুলো তুলে নিয়ে একটি প্লেট খাওয়ার জন্য প্রস্তুত করবেন।
নোটঃ আপনি বিষয়টা বুঝে না থাকলে সমস্যা নেই। কারন, কাস্টমাইজ অ্যাপ তৈরি করার ওয়েবসাইট গুলো ভিডিও করার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়ে থাকে কিভাবে অ্যাপ তৈরি করবেন।
যে সকল প্লাটফর্ম থেকে আপনি কাস্টমাইজ অ্যাপ তৈরি করতে পারবেন।
কাস্টমাইজ অ্যাপ তৈরি করার পর সেই অ্যাপ আপনাকে পেমেন্ট করতে হবে সেই ওয়েবসাইটকে যার মাধ্যমে আপনি অ্যাপটি তৈরি করলেন।
কাস্টমাইজ অ্যাপ তৈরি করার ওয়েবসাইট গুলোকে প্রতি মাসে একটি মিনিমাম ডলার আপনাকে পেমেন্ট করতে হবে। যা খুবেই ব্যয়বহুল।
সব থেকে ভালো হয় কোন ডেভলোপার ভাড়া করে অ্যাপ তৈরি করে নিলে এই ক্ষেত্রে খরচ কম হবে। আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট প্লেস গুলো থেকে ডেভলোপার কন্ট্রাক করে অ্যাপ তৈরি করে নিতে পারেন।
সাধারন মানের একটি অ্যাপ তৈরি করার জন্য ১০০ থেকে ২০০ ডলার খরচ হবে। অ্যাপের খরচ নির্ভর করে আপনি কোন ধরনরে অ্যাপ চাচ্ছেন তার উপর।
যেমন, সোস্যাল মিডিয়া বা ডেটিং রিলেটেড একটি এপস তৈরি করার জন্য এক লক্ষ থেকে দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।
অ্যাপ তৈরি করার জন্য কাকে হায়ায় করব?
এটা আসলে নির্ভর করে আপনি কোন ধরনের অ্যাপ তৈরি করতে চান। ধরুন, আপনি byju’s App এর মত একটি অ্যাপ তৈরি করতে চাচ্ছেন। এই ক্ষেত্রে আপনার বাজেট কত হতে হবে একবার চিন্তা করুন।
কিন্তু আপনি সাধারন মানের একটি অ্যাপ তৈরি করতে চান। সেই ক্ষেত্রে Fiverr, Freelancer, UpWork ইত্যাদি প্লাটফর্ম গুলো থেকে ডেভলোপার হায়ার করে অ্যাপ তৈরি করে নিতে পারবেন।
অ্যাপ তৈরি করার জন্য মিনিমান প্রাইস ধরুন ১০,০০০ হাজার টাকা থেকে ২০,০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এর সাথে আরও কিছু অতিরিক্ত খরচ আছে যেমন সার্ভার ভাড়া, অ্যাপ পারলিশ ইত্যাদি।
অ্যাপ কিভাবে প্লে স্টোরে পাবলিশ করব?
অ্যাপ প্লে স্টোরে পাবলিশ করলেই আপনি ইনকাম করতে পারবেন বিষয়টা এমন নয়। গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপ পাবলিশ করা সহজ এবং কঠিন দুইটি বিষয় ঠিক। আপনার জানা থাকলে সহজ, জানা না থাকলে কঠিন। প্লে স্টোরে অ্যাপ পাবলিশ করার জন্য বেসিক কিছু বিষয় আপনার থাকতে হবে।
- জিমেইল একাউন্ট
- ডুয়েল কারেন্সি কার্ড অথবা ডলার পেমেন্ট করা যায় এমন কোন একাউন্ট ( গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপ পাবলিশ করার জন্য 25 ডলার পেমেন্ট করতে হবে)
https://play.google.com/console/about/
উপরে দেওয়া লিংকে প্রবেশ করুন। নিচের ছবিটি দেখুন

Go To Play Console Click করুন। এবার নিচের ফর্মটি দেখুন। অ্যাপ পাবলিশ করার জন্য প্রথমে গুগল সার্চ কন্সলে একাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে। দ্বিতীয় ধাপটি হল অ্যাপ পাবলিশ করা।

ক্রিয়েট একাউন্ট এবং পে এই অপশনে ক্লিক করলে আপনার কাছে পেমেন্ট চাইবে। আপনার ভিসা অথবা মাস্টার কার্ড দিয়ে পেমেন্ট কমপ্লিলিট করে একাউন্ট ক্রিয়েট সম্পূর্ণ করতে হবে।
আপনার ডলার পেমেন্ট করার জন্য ভিসা কার্ড অথবা মাস্টার কার্ড থাকতে হবে। যদি ভিসা বা মাস্টার কার্ড না থাকে, তাহলে ভার্চুয়াল ভিসা কার্ড ক্রয় করতে পারবেন।
Virtual Visa Card Payment in bKash
নোটঃ গে টু প্লে কন্সলে ক্লিক করার পর যদি আপনার জিমেইল একাউন্ট লগিন করা না থাকে তাহলে লগিন করে নিতে হবে।
অ্যাপ পাবলিশ কিভাবে করতে হয় বিস্তারিত দেখার জন্য নিচের ভিডিওটি দেখুন।
অ্যানন্ডেয়েড অ্যাপ দিয়ে আয় করার উপায়
কমন যে সকল উপায়ে অ্যানন্ডেয়েড অ্যাপ দিয়ে ইনকাম করা যায় সেই সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
অ্যাপ দিয়ে আয় করার বিভিন্ন ধরনের উপায়ের পারসেন্টেজ

কি ভাবে Fake অর্থ আয়ের মোবাইল অ্যাপ চিনবেন
পেইড অ্যাপঃ অনেক অ্যাপ আছে যাদের সার্ভিস ব্যবহার করার জন্য আপনাকে পেমেন্ট করতে হবে। একটা উদাহরন দেওয়া যাক, আপনি ফেসবুক অ্যাপ ব্যবহার করেন এই ক্ষেত্রে ফেসবুকে কোন ধরনের পেমেন্ট করেন না। কিন্তু কিছু অ্যাপ আছে যাদের সার্ভিস ব্যবহার করতে হলে পেমেন্ট করতে হবে।
Amoled Pro Wallpapers অ্যাপটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে ৮০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে। অ্যাপনি প্রায় ৫০ হাজার ডিভাইসে ইন্সটল করা আছে। এই অ্যাপটি বিভিন্ন ধরনের মোবাইল হোম এবং লক স্কিন ওয়াল পেপার ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে থাকে।

ম্যান্থলি সাবস্ক্রিপশনঃ Netflix, bioscope এই অ্যাপ গুলো আপনাকে monthly subscription ফি দিয়ে ব্যবহার করতে হবে। এই অ্যাপ গুলো ইন্টারটেইনমেন্ট পারপাসে সাজানো হয়েছে।

ফ্রি অ্যাপ গুলো কিভাবে অর্থ আয় করে?
প্রায় ৯৫% অ্যাপ আমরা ফ্রি ব্যবহার করতে পারি। ফ্রি বলতে এই সকল অ্যাপ ইন্সটল করার জন্য কোন ধরনের পেমেন্ট করতে হয় না। এখন প্রশ্ন হল এই ফ্রি অ্যাপ গুলো কিভাবে অর্থ আয় করে?
বিজ্ঞাপনঃ প্রায় ফ্রি অ্যাপ ওপেন বা ব্যবহার করার সময় আমরা বিভিন্ন ধরনের এড দেখতে পাই। এই বিজ্ঞাপন গুলো দেওয়া জন্য এই অ্যাপ গুলো অর্থ নিয়ে থাকে।
উদাহরন দেওয়া যাক, আমার একটি অ্যাপ আছে যা ১ লক্ষ বার ইন্সটল করা হয়েছে। এখন আপনি চাচ্ছেন আমার অ্যাপের মাধ্যমে আপনার পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে, কারন আমার অ্যাপের সাথে ১ লক্ষ জন জড়িত। আপনার বিজ্ঞাপনের জন্য অবশ্যই আমি পেমেন্ট নিবো।
গুগল এড ওয়ার্ডঃ আপনার অ্যাপের যথেষ্ট সংখ্যাক ব্যবহার কারী থাকলে আপনি গুগল বিজ্ঞাপনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার পর গুগল যাচাই বাচাই করে দেখবে যদি সব কিছু ঠিক থাকে তাহলে আপনি গুগল বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন।
রেফারেলঃ আপনার অ্যাপের মাধ্যমে ফ্রি মোবাইল ওয়াল পেপার ডাউনলোড করার সুয়োগ দিয়ে থাকেন। এখন আপনি আপনার অ্যাপে Shutterstock, istockphoto এই ওয়েবসাইট গুলোতে আপনার রেফারের মাধ্যমে ভিজিটর কনভার্ট করলেন। যদি সেই ভিজিটর Shutterstock, istockphoto, গিয়ে কোন ফটো ক্রয় করে তাহলে আপনি একটি কমিশন পাবেন।
পণ্য বিক্রয়ঃ আপনি চাইলে আপনার মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রয় করতে পারেন। উদাহরন দেওয়া যাক, আপনার একটি বিউটি টিপস রিলেটেড অ্যাপ আছে। আপনি এই অ্যাপে কিছু বিউটি প্রোডাক্ট বিক্রয় করার জন্য লিংক বা পণ্য শেয়ার করলেন।
ওয়ান-টাইন অ্যাপ ইন্সটল ফিঃ একটি ডিভাইসে একবার কেউ আপনার অ্যাপ ইন্সটল করলে তার জন্য তাকে ২০ টাকা বা ১০ টাকা পেমেন্ট করতে হবে। তবে এই ফি আপনি একবারের বেশি নিতে পারবেন না।
Click the above button to visit next page
You visited 1/10 pages