ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়। ব্লগ থেকে কিভাবে আয় করা যায়
ব্লগিং বা ব্লগ থেকে কিধরনের আয় করা যায়? এই প্রশ্নটির সঠিক উত্তরটা আপনি এই লেখার মাধ্যমে পাবেন। একই সাথে ব্লগ থেকে কিভাবে আয় করবেন সেই বিষয় বিস্তারিত ভাবে বর্ননা করা হবে।
নোটঃ আপনি অনেক গুলো ব্লগ পড়ে আমরার এই লেখাটি পড়া শুরু করে থাকলে আমি বলব এই লেখাটি পড়ার পরে আপনাকে অন্য কোন ব্লগে যেতে হবে না।
প্রথম প্রশ্নঃ ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়?
ব্লগিং করে প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা ইনকাম করা সম্ভব। আপনার ব্লগ সাইটে প্রতিদিন ৫০০ মানুষ ভিজিট করে। ৫০০ মানুষ ভিজিট করলে আপনার পেজ ভিও হবে ২০০০ ( মিনিমাম )। আপনি আপনার বিজ্ঞাপনের ‘সি’ পাবেন মিনিমাম ৫০। যদি প্রতি ‘সি’ ০.০৩ সেন্ট হয় তাহলে আপনার ইনকাম হবে ১ ডলার ৫০ সেন্ট। আবার আপনার ‘সি’ ০.০৮ হলে ইনকাম হবে ৫০*০.০৮ = ৪ ডলার।
সিঃ মানে ক্লিক
তারা মানে বিষয় টা দাঁড়ালো আপনি ব্লগ থেকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কত টাকা ইনকাম করবেন এটা সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভর করবে আপনার ব্লগের ভিজিটর এবং কোন দেশ থেকে ভিজিটর আসতেছে তার উপর।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলংকা ইত্যাদি দেশ গুলো থেকে আপনার বিজ্ঞাপনের একটি ‘সি’ এর জন্য যত টাকা পাবেন ইউরোপের দেশ থেকে ‘সি’ পেলে তার থেকে বেশি অর্থ আয় করবেন।
এখানে আরও একটি বিষয় আছে। একজন মানুষ আপনার ব্লগে প্রবেশ করার পর যদি খুব তাড়াতাড়ি চলে যায় তবে বিজ্ঞাপনের সিপিসি কম পাওয়া যায়।
সিটিআর মানে ‘সি এর জন্য পাওয়া অর্থ’ যাকে বলা হয় ( Click-through rate )
আমার একটি ব্লগ থেকে এক মাসের আয়ের স্কিনশর্ট দেখুন।

৩১,১৮৪ পেজ ভিও সি পেয়েছি ৩২৩০ মোট আয় ১৫৯.৪৭ ডলার। তুলনা মূলক ভাবে আমার এখানে সি বেশি। বেশি হওয়ার কারন ও আছে। কারন হল আমি যে ওয়েবসাইটির স্কিন শর্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করাল সেটি একটি ভিজিটর ইন এবং আউট সাইট।
মানে এই সাইটে এসে কেউ ব্লগ পড়ে না। কিছু নিদিষ্ট কাজ করে চলে যায়। খুব দ্রুত ভিজিটর আসা যাওয়ার কারনে সি বেশি হয় এবং একটিভ ভিও ভিজাবেল কম হয়।
নোটঃ বাংলা ব্লগের থেকে ইংরেজী ব্লগ থেকে বেশি অর্থ ইনকাম করা সম্ভব। কারন ইংরেজী ব্লগের ভিজিটর অনেক দেশ থেকে পাওয়া যায়। কিন্তু বাংলা ব্লগের ভিজিটর সীমাবদ্ধতা আছে।
উপরে অনেক কিছু অনেক জন বুঝতে পারবেন না। আপনি ব্লগিং সেক্টরে নতুন হয়ে থাকলে বোঝার কথা নয়। এই জন্য সহজ ভাষায় বলি।
আপনার ব্লগে যত মানুষ ভিজিট করবে আপনার ইনকাম তত হবে। যদি মানুষ ভিজিট কম করে তাহলে ইনকাম কম হবে। সুতরাং ব্লগের ইনকামের নিদিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।
তারপরেও গুগল অ্যাডসন্স ব্লগের বিভাগ এবং অঞ্চলের উপর ভিত্তি করে প্রতি ৫০,০০০ হাজার পেজ ভিও এর জন্য একটি অনুমানিক আয়ের ধারনা দেয়।
আপনার ব্লগের বিষয় খবর এবং আপনার এলাকা হল এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ। এবং আপনার ওয়েবসাইটের মাসিক পেজ ভিও ৫০,০০০ হাজার হলে আপনার বার্ষিক উপার্জন ২০১০ ডলার সম্ভবনা থাকে। এর মানে প্রতি মাসে আপনার ইনকাম হবে ১৬৭.৫ ডলার।
আবার আপনার বিভাগ ইন্টারনেট এবং টেলিকম হলে প্রতি মাসে ৫০,০০০ হাজার পেজ ভিও হওয়ার জন্য ইনকাম হবে বার্ষিক ৬৭৩৮ ডলার। প্রতি মাসে গড়ে ইনকাম ৫৬১.৫ ডলার।
দ্বিতীয় প্রশ্নঃ ব্লগ থেকে কিভাবে আয় করা যায়?
উপরের যে আয়ের হিসাবটি দেওয়া হয়েছে সেটা হল গুগল অ্যাডসন্স থেকে আয়ের হিসাব। এছাড়া একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে কয়েক ভাবে ইনকাম করা সম্ভব। চলুন দেখে নেওয়া যাক কত ভাবে একটি ব্লগ থেকে আয় করা যায়।
কিভাবে ব্লগার হওয়া যায় বিস্তারিত
বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্লগ থেকে আয়
আমার এই ব্লগে মোট ব্লগ পোষ্ট আছে ৩৫টি । আমার এই লেখাটি ৩৫ নাম্বর পোষ্ট। এর পরে অবশ্যই আমি আরও লিখবো। আমার ব্লগের সংখ্যা ২৫ টি থাকা অবস্থায় আমি গুগলের অ্যাডসন্স প্রোগ্রামে বিজ্ঞাপনের জন্য এপ্লাই করি।
এপ্লাই করার ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে আমার সাইটটি বিজ্ঞাপনের জন্য অনুমতি পায়। এখন আপনি আমার সাইট ভিজিট করতেছেন। এই অবস্থায় যদি কোন বিজ্ঞাপন আপনার ভালো লাগে এবং আপনি ‘সি’ করলে আমি কয়েক সেন্ট পাবো। যদি ‘সি’ না হয় তাহলে আয় হবে না।
শুধু যে ব্লগে গুগলের অ্যাডসন্স বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় করা যায় বিষয়টা কিন্তু এমন নয়। গুগল অ্যাডসন্স ব্যতিত অন্য কন্টেন্ট মনিটাইজেশন প্লাটফর্ম গুলো হল।
যে সকল ওয়েবসাইট বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্লগ থেকে আয় করার সুযোগ দিয়ে থাকে
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার মাধ্যমে ব্লগ থেকে আয়
আপনার পন্য আমি আমার মাধ্যমে বিক্রি করে দিবো তার বিনিমনে আপনি কিছু কমিশন আমাকে দিবেন। এইটাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। অনেক মানুষ অনেক ভাবে আপনাকে বলবে কিন্তু মূল বিষয়টি এমন টাই। হ্যাঁ কোন কোন কোম্পানি কমিশন বেশি আবার কোন কোন কোম্পানি কমিশন কম দিয়ে থাকে।
অনেক কোম্পানি সরাসরি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম চালু করে আবার অনেক কোম্পানি তৃতীয় কোন মাধ্যম দিয়ে বিষয়টা পরিচালনা করে থাকে।
যা হো মূল কথায় আসা যাক। ধরুন আমার একটি ডোমেইন হোস্টিং কোম্পানি আছে। এবং আমার একটি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে। আপনি আমার ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি অ্যাফিলিয়েট একাউন্ট ওপেন করলেন।
আমি আপনাকে একটি অ্যাফিলিয়েট লিংক দিলাম। আপনাকে যে অ্যাফিলিয়েট লিংকটি দেওয়া হবে সেটা ইউনিক। যখন কেউ লিংকের মাধ্যমে আমার ওয়েবসাইটে এসে ডোমেইন এবং হোস্টিং ক্রয় করবে তখন আপনাকে আমি কমিশন দিবো।
আপনার ব্লগ সাইট থাকলে আপনার ব্লগ সাইটে আপনি সেই লিংটি প্রচারনা করবেন। শুধু ব্লগ সাইট কোন আপনি চাইলে সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে লিংক প্রচারনা করতে পারেন।
শুধু ডোমেইন এবং হোস্টিং কোম্পানি নয়। আপনি যে কোন কোম্পানির পন্য ব্লগের মাধ্যমে প্রচার করে অর্থ ইনকাম করতে পারবেন। তবে যে কোম্পানির পন্য প্রচার করবেন তার যেন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম থাকে।
ব্লগের মাধ্যমে নিজস্ব পন্য বিক্রি করে আয়
যদিও ব্লগের মাধ্যমে পন্য বিক্রি করে আয় খুব একটা দেখা যায় না। তারপরেও আপনি ট্রাই করে দেখতে পারেন। আপনি যে কোন ধরনের পন্যের বিজ্ঞাপন ব্লগের হোর্ডারে, ফুটারে, বা সাই বারে দিতে পারেন।
আপনি বাজার থেকে ইউনিক পন্য ক্রয় করে আপনার ব্লগের মাধ্যমে প্রচার করে ইনকাম করতে পারেন।
সার্ভিস বিক্রি করে ব্লগ থেকে ইনকাম
আমি ভালো ব্লগিং পারি। আমি জানি কিভাবে ব্লগ খুলতে হয়? এবং ব্লগের খুটি নাটি সকল বিষয় আমার জানা আছে। আমার জানা বিষয় গুলো টিউটোরিয়াল তৈরি করে কোর্স হিসাবে আমার আমার ব্লগের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারি।
এবং অনেক ব্লগার তাদের ব্লগের মাধ্যমে সার্ভিস বিক্রি করে ইনকাম করে থাকে। এবং এটা একটি ভালো মাধ্যম ইনকাম করার।
ক্রিয়েটর রিওয়ার্ড থেকে ব্লগ থেকে ইনকাম
আপনি আপনার ব্লগে সবসময় হেল্পফুল কন্টেন্ট শেয়ার করে। আপনার কন্টেন্ট পড়ে ভিজিটরের উপকার হয়। আপনি চাইলে আপনার ব্লগে ক্রিয়েটর রিওয়ার্ড অপশন যুক্ত করতে পারেন।
আপনার ব্লগ যারা ভিজিট করে তাদেরকে আপনি রিওয়ার্ড দেওয়ার জন্য বলতে পারেন। বিষয়টা এমন নয় যে প্রতিটি ভিজিটর আপনাকে রিওয়ার্ড দিবে।
হয়তো ১০০০ এক হাজার ভিজিটরের মধ্যে ১০ জন আপনাকে রিওয়ার্ড দিবে। অনেক ব্লগার রিওয়ার্ড প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রতি মাসে কয়েক হাজার ডলার আয় করে।
পেইড সাবস্ক্রিপশন থেকে ব্লগ থেকে আয়
আপনি চাইলে আপনার ব্লগে পেইড সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। পেইড সাবস্ক্রিপশন হল আপনাপর ব্লগ যারা পড়বে তারা প্রতি মাসে নিদিষ্ট পেমেন্ট দিয়ে ব্লগ পড়বে।
বিষয়টা হল যারা সাবস্ক্রিপশন নিবে সেই সকল ভিজিটর ব্লগ ভিজিট করতে পারবে এবং সকল কন্টেন্ট পড়তে পারবে। সাবস্ক্রিপশন ছাড়া একটি নিদিষ্ট সীমার মধ্যে ব্লগ ভিজিটর, ব্লগ ভিজিট করতে পারবে।
পেইড সাবস্ক্রিপশন মাসিক বা বাৎসারিক ভিত্তিক হতে পারে। যেমন প্রতি মাসে ৫ ডলার অথবা সাৎসারিক ৫০ থেকে ৬০ ডলার।
একটা বিষয় হল পেইড সাবস্ক্রিপশন দিয়ে ব্লগ থেকে আয় করতে চাইলে আপনার ব্লগটি অনেক অনেক পপুলার হতে হবে।
শেষ কথা
একটি ব্লগ থাকলে আপনি বিভিন্ন ভাবে আয় করার জন্য ব্লগ সাইটটি ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু শর্ত একটাই ব্লগে ভিজিটর থাকতে হবে। ভিজিটর হল ব্লগ থেকে আয় করার প্রধান উৎস।
বিষয়টা হল বাজার এবং বাজারে মানুষ থাকলে ব্যবসা হতে বাধ্য। যদি বাজার থাকে কিন্তু বাজারে মানুষ না থাকে তাহলে ব্যবসা হওয়ার কোন সম্ভব না নেই।
Click the above button to visit next page
You visited 1/10 pages