মেয়েদের ঘরে বসে ফেসবুকে ব্যবসা করার আইডিয়া

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় কয়েক হাজার মেয়ে ফেসবুকের মাধ্যমে ঘরে বসে রোজগার করছে। এবং অনেক মেয়ে ফেসবুকে ব্যবসা শুরু আজকে অনলাইন বা অফলাইনে স্টোর ওপেন করেছে। আজকে আমি কিছু নতুন ফেসবুক ব্যবসার আইডিয়া শেয়ার করব। যা মেয়েরা ঘরে বসে ফেসবুকের মাধ্যমে করতে পারবে।

প্রথম কথা হচ্ছে আমি যে সকল আইডিয়া শেয়ার করব আপনাকে সেই সকল ব্যবসা করতে হবে বিষয়টা কিন্তু তেমন নয়। আপনি চাইলে আপনার পছন্দ মত ব্যবসা ফেসবুকে করতে পারেন। এবং ফেসবুকে শুধু ব্যবসা নয় একজন ভিডিও ক্রিয়েটর হয়ে ফেসবুক পেজ থেকে ইনকাম করতে পারবেন।

ব্যবসার আইডিয়া যা ঘরে বসে ফেসবুকের মাধ্যমে করা সম্ভব

নিচের উল্লেখ্য করা ব্যবসা গুলো আগে থেকে কেউ করে থাকতে পারে। সুতরাং এই ব্যবসার আইডিয়া গুলো একবারে ইউনিক তা কিন্তু নয়। আপনি আপনার মত করে নিচে উল্লেখ্য করা ব্যবসা গুলো শুরু করতে পারেন।

  • মাটির তৈরি শোপিস
  • ইউনিক রান্না
  • ইউনিক পন্যের ব্যবসা
  • অরগানিক সবজির ব্যবসা
  • দেশি ফলের ব্যবসা
  • ডিজাইনার গহনা
  • দেশি মাছের ব্যবসা
  • পিঠার ব্যবসা

১. মাটির তৈরি শোপিস

মাটির শোপিস
মাটির শোপিস

নিজের বাড়ির শোকেস মাটির তৈরির শো-পিজ দেখতে পাওয়া যায় না। বর্তমানে কাঠের বা প্লাস্টিকের শো-পিজ বেশি দেখতে পাওয়া যায়।

আপনি কুমারদের কাছ থেকে অর্ডার দিয়ে ইউনিক স্টাইলের কিছু মাটির শো-পিজ তৈরি করে নিতে পারেন। আপনার তৈরি করা শো-পিজ গুলো ফেসবুক পেজে আপলোড দিয়ে মুল্য নির্ধারন করে দিন।

প্রথম অবস্থায় অনেক অর্থ ইনভেস্ট করার দরকার নেই। যদি ভালো সাড়া পান তাহলে পুনরায় অর্ডার দিয়ে তৈরি করে নিন।

  • অবশ্যই যেন ইউনিক ডিজাইন এবং টেকসই হয়।
  • মুল্য নির্ধারন করুন সীমিত লাভ রেখে।
  • শো-পিজের কোয়ালিটির দিকে নজর দিতে হবে। যেমন, রং, ফিনিশিং, স্টাইল, ইত্যাদি।
  • ডেলিভারী করার সময় পন্য নষ্ট হয়ে গেলে ফেরত নিন এবং পুনরায় পাঠিয়ে দিন।

ব্যবসাটা মেয়ে মানুষের জন্য ভালো। কারন আপনাকে বেশি কষ্ট করতে হবে না। প্রথম অবস্থায় কিছু পুঁজি লাগবে কিন্তু চালু হয়ে গেলে ভালো ব্যবসা করতে পারবেন।

২. রান্না ব্যবসা

দেশি রান্না
দেশি রান্না

যারা চাকরি করে তারা বিশেষ করে দেশি রান্না খুবেই মিছ করে। প্রতিদিন ফাস্ট ফুড খেতে খেতে একটা সময় বিরক্ত ধরে যায়। তবে দেশ রান্না ব্যবসা শুধু শহর এলাকায় করা সম্ভব।

কিছু কিছু রান্না করার জন্য অনেক বেশি প্রস্তুতির প্রয়োজন। যেমন আপনি যদি সিদল রান্না করতে চান তাহলে অনেক দিন ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

সেই ক্ষেত্রে আপনি আপনার ফেসবুক পেজের মাধ্যমে সিদল রান্না করে বিক্রয় করতে পারেন। আপনার রান্নার কারার ব্যবস্থা যেন দেশি হয়।

আবার অনেক মানুষ হাসের মাংস পছন্দ করে। হাসের মাংস প্রস্তুত করার যে ঝামলা সেটা মানুষ নিতে চায় না। এখন আপনি যদি একটি গোটা হাস নিদিষ্ট একটি মূল্যে ফেসবুকে বিক্রয় করেন তাহলে অনেক মানুষ ক্রয় করতে চাইবে।

এখান আপনার ওভার-অল লাভ কম হবে কিন্তু মাংস গুলো এক সাথে বিক্রি হবে। আবার অনেক মানুষ গরু, খাসির ভুটি খেতে পছন্দ করে। সমস্যা হল এই সকল খাবার প্রসেস করা খুবেই কষ্টের। আপনি এই সকল খাবার প্রসেস করে বিক্রয় করতে পারবেন।

আপনি চাইলে ‍দুই ধরনের রান্নার ব্যবসা করতে পারবেন ফেসবুকে মাধ্যমে ঘরে বসে।

  • প্রি-রান্নাঃ যে সকল রান্না খাওয়ার আগে প্রিপারেশন করতে অনেক সময় লাগে। সেই সকল খাবার রান্নার জন্য প্রস্তুত করে দেওয়া।
  • সরাসরি রান্নাঃ আপনি যে কোন দেশি রান্না তৈরি করে সরাসরি ফেসবুকে মাধ্যমে কাস্টমারের কাছে বিক্রয় করা।

৩. ইউনিক পন্যের ব্যবসা

ইউনিক পন্যের ব্যবসা
ইউনিক পন্য

ইউনিক পন্যের ব্যবসা করার জন্য আপনাকে বাইরে বাইরে ঘুরতে হবে অনেক। বিশেষ করে মার্কেট এলাকায় আপনাকে ঘুরতে হবে।

কিছু কিছু পন্য আছে যা ঢাকা নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাতে পাওয়া যায়। সেই একই পন্য আপনি আপনার জেলা শহরের পাবেন না।

আপনাকে ঢাকা শহরের কাস্টমার টার্গেট করে ব্যবসা করার কথা চিন্ত করা যাবে না। আপনাকে চিন্তা করতে হবে ঢাকা শহরের বাইরে ব্যবসা করতে হবে।

  • অনলাইন থেকে পন্য অর্ডার করে ফেসবুকে বিক্রি করতে পারেন।
  • অব্যশই পন্য ক্রয় করার পূর্বে মান যাচাই করতে হবে।
  • অথবা লোকাল বাজার থেকে পন্য ক্রয় করে ফেসবুকে বিক্রি করা যেতে পারে।
  • এই ব্যবসার জন্য আপনাকে ফেসবুকে পেইড মার্কেটিং করতে হতে পারে।

৪. অর্গানিক সবজির ব্যবসা

অর্গানিক সবজি
অর্গানিক সবজি

এই ব্যবসার কার জন্য আবাদি জমি থাকা দরকার। আপনি ছাদ কৃষি করতে পারবেন তাবে ব্যবসার আকারে করার জন্য আবাদি জমি ভালো।

অরগানিক সবজি হল, যে সকল সবজি চাষ করার জন্য কোন ধরনের রাসানিক ব্যবহার করা হয় না। আপনাকে সবজি চাষ করতে হবে সম্পূর্ন প্রাকৃতিক ভাবে। এর জন্য অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে কিভাবে রাসানিক ব্যবহার না করে সবজি চাষ করা যায়।

অরগানিক সবজির চাহিদা ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে ভালো আছে। সঠিক ভাবে এই ব্যবসা করতে পারলে লাভ বান হতে পারবেন।

প্রথম অবস্থায় অল্প করে শুরু করেন। পরর্বতীতে গ্রাহক সাড়া পেলে বেশি করে শুরু করতে পারবেন। তবে সেই সকল সবজি চাষ করা ভালো হবে যে সকল সবজি বেশি দিন ভালো থাকে। যেমন পেঁপে, কুমড়া, চুনি কুমড়া, কাঁচা কলা, ইত্যাদি।

  • সবজি চাষের ভিডিও ফেসবুক পেজে শেয়ার কারতে হবে।
  • এবং সব সময় ভিডিও করে আপডেট দিতে হবে।
  • গ্রাহকের কাছে সর্বদা সত থাকতে হবে।
  • মিনিমান লাভে পন্য বিক্রয় করতে হবে।

৫. দেশি ফলের ব্যবসা

দেশি ফল
দেশি ফল

ফলের দোকানে গিয়ে ফল ক্রয় করে খেতে গেলে মনের মধ্যে একটা কথা বার বার মনে হয় ফরমালিন নাই তো। এবং এটা সত্য যে অসাধু ব্যবসায়ি বেশি লাভের আশার ফলের মধ্যে ফরমালিন মিশিয়ে থাকে।

আপনি ফেসবুকে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করুন যেখানে ফরমালিন মুক্ত দেশি ফল বিক্রয় করা হবে। ধরুন আপনি গ্রামে বাস করেন। আপনার এলাকার ভিন্ন ধরনের ফল যেমন আম, জাম, কলা, কাঁঠাল, ইত্যাদি লোকাল ভাবে ক্রয় করে ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারেন।

হ্যাঁ বাজার থেকে একই কাঁঠাল মানুষ ১০০ টাকা ক্রয় করতে পারবে। কিন্তু আপনার কাছে কাঁঠালটি ক্রয় করলে রাসানিক মুক্ত ফল পাবে। মানুষ ২ টাকা বেশি দিয়ে ভালো খেতে চায়।

৬. ডিজাইনার গহনা

ডিজাইনার গহনা
ডিজাইনার গহনা

ফেসবুকে অনেক মেয়ে ডিজাইনার গহনার ব্যবসা করে। সেই একই ব্যবসা আপনি করতে পারবেন। কিন্তু একটু ভিন্ন ভাবে।

ফেসবুকে যে সকল নারী বা মেয়ে গহনা বিক্রি করে তারা সকলে রেডিমেট গহনার ব্যবসা করে থাকে। আপনি রেডিমেট গহনার ব্যবসা করবেন না।

আপনি প্রথমে কাস্টমারের কাছে গহনার ডিজাইন নিবেন তার পর সেটা তৈরি করে বিক্রি করবেন। এই ব্যবসাটা কে বলা হয় কাস্টোমাইজ ব্যবসা।

এর জন্য আপনাকে সময় নিয়ে অর্ডার কম্পিলিট করতে হবে। যেহেতু কাস্টোমাইজ করে তাদের পছন্দ মত গহনার ডিজাইন করে দিবেন সেহেতু মার্কেটের থেকে গহনার মূল্য বেশি নেওয়া যাবে।

এর জন্য অবশ্যই আপনার সাথে গহনার ডিজাইনারের সাথে যোগাযোগ থাকতে হবে। এবং অবশ্যই কোয়ালিটি পন্য দিতে হবে।

৭. পিঠার ব্যবসা

পিঠা পুলি
পিঠা পুলি

পিঠার ব্যবসা করতে পারেন। দেশি পিঠা বা অন্য দেশের পিঠা নিদিষ্ট প্যাকেজ মূল্যে ফেসবুকে বিক্রি করতে পারেন।

আপনি একটি প্যাকেজে ২০ থেকে ৩০ টি পিঠা দিবেন। এবং এর জন্য একটি মূল্য নির্ধারন করবেন। এই ভাবে বিভিন্ন প্যাকেজ ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন।

এই ব্যবসার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে কোয়ালিটি পন্য তৈরি করতে হবে। কোন ভাবেই কাস্টমারকে খারাপ পন্য ডেলিভারি করা যাবে না।

প্রয়োজনে পিঠা তৈরি করা সমস্ত প্রক্রিয়া ভিডিও করে আপনার ফেসবুক পেজে আপলোড করতে হবে। যারা রান্না করতে ভালো বাসে তাদের জন্য এই ব্যবসা অনেক লাভ জনক হবে।

৮. দেশি মাছের ব্যবসা

বর্তমানে সব ধরনের মাছ কৃত্রিম ভাবে চাষ হচ্ছে। প্রাকৃতিক ভাবে পাওয়া মাছের পরিমান কমে যাচ্ছে। এখন সব কিছুর মধ্যে ব্যবসা।

কৃত্রিম ভাবে চাষ করা দেশি মাছের সাধ। অন্যদিকে প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে উঠা দেশি মাছের সাধ অনেক পার্থক্য আছে।

আপনার এলাকা থেকে দেশি মাছ সংগ্রহ করে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারেন। কোন ভাবেই চাষের মাছ বিক্রি করবেন না।

কই, মাগুর, সিং, যা কিছুই বিক্রি করেন সব যেন দেশি হয় যা প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে উঠা। দেশি মাছ ক্রয় করে ভালো ভাবে প্রসেসিং করে ফ্রিজ করে বিক্রি করুন।

আমি মূল্য বেশি নিবেন কিন্তু আপনার মাছের সাধ হবে কৃত্রিম ভাবে চাষ করা মাছের মত না।

ঘরে বসে মোবাইলে আয় করার উপায়

শেষ কথা

আপনি যে ব্যবসায় ফেসবুকে করেন না কেন আপনাকে সত থাকতে হবে। যদি সততার সহিত ফেসবুকে ব্যবসা করা যায় তাহলে লক্ষ টাকা ইনকাম করা যাবে।

হ্যাঁ প্রথম অবস্থায় তেমন সাড়া নাও পেতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে মার্কেটিং টেকনিক অ্যাপলাই করতে পারেন। যেমন আপনি আপনার পন্য কোন ইউটিউবারকে গিফট করতে পারেন।

অথবা কোন পপুলার ফেসবুক পেজের এডমিনকে গিফট করতে পারেন। এবং তাদের কাছে বলতে পারেন যে আপনার পন্যের একটি ভিডিও তৈরি করে তাদের চ্যানেল বা পেজে শেয়ার করে।

দেখুন মার্কেটিং না করে জনপ্রিয় হওয়াটা সহজ হবে না। যদি একটু বুদ্ধি খাটিয়ে মার্কেটিং করা যায়, ভালো ব্যবসা করতে পারবেন আপনার ফেসবুক পেজ থেকে।

এবং সর্বশেষ যে কথাটি যুক্ত হবে সেটা হল ধৈর্য্য। আপনাকে ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকতে হবে। আজকে ২টা গ্রাহক কালকে যেন ২০০ গ্রাহক হয়। শুধু পন্যের মানের যেন সমস্যা না হয়।

Click the above button to visit next page

You visited 1/10 pages

This div height required for enabling the sticky sidebar