ফ্রিল্যান্সিং VS চাকরি
আপনি যদি এই লেখাটি পড়ে থাকেন তার মানে আপনি জানতে চাচ্ছেন যে আপনি কি করবেন? অথবা আপনি জানতে চান কোনটি ভালো হবে ফ্রিল্যান্সিং VS চাকরি।
আপনি ফ্রিল্যান্সিং এবং চাকরি ভালো বা মন্দ দিক গুলো জানার জন্য যদি এই লেখাটি পড়তে শুরু করনে তাহলে আমি বলব আপনি সঠিক লেখাটি পড়ছেন।
আমার বিশ্বাস এই লেখাটি পড়ার পর আপনার সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে।
ফ্রিল্যান্সিংঃ ফ্রিল্যান্সিং যার অর্থ মুক্ত পেশা। আপনি আপনার ইচ্ছামত কর্ম ঘন্টা নির্ধারন করে কাজ করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং মানে কিন্তু এই নয় যে আপনি একটি কাজ নেওয়ার পর আপনার ইচ্ছামত সেই কাজটি বায়ারকে সাবমিট করবেন। ফ্রিল্যান্সিং আপনাকে কাজের ক্ষেত্রে যে সকল সুবিধা এবং অসুবিধা দিবে তার বিস্তারিত জানবো।
ফ্রিল্যান্সিং পেশার সুবিধা
- আপনি আপনার মত সময় নির্ধারন করে কাজ করতে পারবেন। আপনি চান আমি সকল ১০ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কাজ করব সুতরাং করতে পারবেন।
- ফ্রিল্যান্সিং পেশায় থাকলে আপনি পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে কাজ করতে পারবেন।
- ফ্রিল্যান্সিং পেশায় থাকলে আপনি ইচ্ছামত ছুটি কাটাতে পারবেন। আপনার ইচ্ছা হলে ১ সপ্তাহ কাজ বন্ধ করে রাখতে পারবেন।
- ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আপনি আপনার বস। আপনাকে অন্য কারো অন্ডারে কাজ করতে হবে না। আপনি যেমন সিন্ধান্ত নিবেন ঠিক তেমন কাজ করবেন।
- ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আয়ের কোন সীমাবন্ধতা থাকে না। আপনি চাইলে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
- এই পেশায় কোন ধরনের জবাব দিহীতা করতে হয় না। কারন আপনার বস আপনি নিজেই।
- আপনার আয় বেশি হলে দুই থেকে চার জন্য মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবেন।
- আপনার ইচ্ছা মত পেশা পরির্বতন করতে পারবেন।
- বিভিন্ন ধরনের সমাজিক কর্ম কান্ডে অংশ গ্রহন করতে পারবেন।
- অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারদের ডিমান্ড দিন দিন বাড়তে থাকে।
- একজন ফ্রিল্যান্সার চাকরি জীবির থেকে বেশি আয় করে সুতরাং সে তার জীবনের স্বপ্ন গুলো পূরন করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং পেশার অসুবিধা
- আজ ফ্রিল্যান্সিং শুরু করলেন কালকে থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন তা কিন্তু নয়। এই পেশায় প্রচুর ধৈর্য্য এবং সংগ্রামের প্রয়োজন হয়।
- মার্কেটপ্লেসে নিদিষ্ট সময়ে বায়ারের কাজ সাবমিট করতে হয়। আপনি নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে বায়ারের কাজ সাবমিট করতে না পারলে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
- এই পেশায় ভুল কারা কোন সুযোগ নেই আপনাকে কাজ শিখে কাজ করতে আসতে হবে। আপনি যদি মনে করেন যে আপনি কাজ করতে করতে শিখবেন তাহলে হবে না। হ্যাঁ কিছু কিছু কাজের ক্ষেত্রে হয়তো সম্ভব কিন্তু সব কাজরে ক্ষেত্রে নয়।
- আপনার নিদিষ্ট কোন বেতন থাকবে না। আপনি কাজ করলে ইনকাম হবে যদি কাজ বন্ধ রাখেন তাহলে ইনকাম বন্ধ হয়ে যাবে।
- আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলো থেকে কাজ পাবেন এমন কোন নিশ্চয়তা নেই। অনেক ফ্রিল্যান্সার কয়েক মাস ঘুরে কোন কাজ পায় না। আবার অনেক ফ্রিল্যান্সার কিছু দিনের মধ্যে কাজ পেয়ে যায়। আপনার প্রোফাইল এবং যোগাযোগ দক্ষতার উপর ভিত্তি করে কাজ পাবেন।
- মার্কেটপ্লেস গুলো যে কোন সময় তাদের নিময়-নীতি পরির্বন করে। এই কারনে ফ্রিল্যান্সারদের বিভিন্ন সমস্যার সম্নূখ হতে হয়।
- ইনকাম নিশ্চয়তা না থাকার কারনে দুশ্চিয়তা মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকে।

ছাত্রদের ইন্টারনেট থেকে আয় করার উপায়
চাকরি কারার সুবিধা
- চাকরি ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা বিহীন এবং অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ উভায় চাকরি পায়।
- অভিজ্ঞতা বেশি হওয়ার সাথে সাথে চাকরি ক্ষেত্রে আপনার ডিমান্ড বাড়তে থাকে।
- আপনাকে দিনের নিদিষ্ট একটি সময়ে অফিস করতে হবে। বাকি সময় টুকু আপনি আপনার ইচ্ছামত ব্যবহার করতে পারবেন।
- প্রতি মাসের শেষে আপনি আপনার চাকরির বেতন পাবেন। আপনি ছুটিতে থাকলেও বেতন পাবেন।
- আপনি চাকরি কারা কালিন কোন ধরনের ভুল করলে তা ঠিক করার সময় পাবেন।
- যেহেতু প্রতি মাসের শেষে আপনি বেতন পাবেন সেহেতু বাড়ি ভাড়া, দোকান বিল, বাজার খরচ ইত্যাদি বিষয় খরচ করা অর্থের সমস্যা হবে না।
- চাকরি ধরনের এর উপর নির্ভর করে কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের পলিসি প্রদান করে থাকে। যা আপনার স্বপ্ন পূরন করতে সহযোগিতা করবে।
- আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ অসুন্থ হলে চাকরির পলিসি অনুযায়ি অফিস থেকে সহযোগিতা পাবেন।
- ঈদ, পুজা, বড় দিন ইত্যাদি দিন গুলো বেতনের অতিরিক্ত অর্থ পাবেন।
- একজন চাকরি করা ব্যক্তিকে আমাদের সমাজ যে ভাবে মূল্যায়ন করে সে ভাবে একজন ফ্রিল্যান্সারকে করে না। অবশ্য দিন দিন এর গতি পথ পরির্বতন হচ্ছে।
চাকরি করার অসুবিধা
- অভিজ্ঞতা বিহীন ভালো মানের চাকরি পাওয়া সম্ভব নয়।
- ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ হাজার টাকা চাকরি করে জীবন চলা সম্ভব কিন্তু স্বপ্ন পূরন করা সম্ভব নয়।
- মাস শেষে নিদিষ্ট বেতন। বেতনের বাইরে এক টাকা ইনকাম করার মত সুযোগ নেই।
- ফ্যামিলি সদস্য নিয়ে কোথাও বেড়াতে যেতে চাইলে ১ বছর ধরনে প্লান করতে হয়। এরপর যদি সুযোগ হয় তো বাজেট হয় না।
- দিনের নিদিষ্ট সময়ে বন্ধি থাকার কারনে নিজেকে বদ্ধ খাচার পাখির মত মনে হয়।
- ছুটির দিন ব্যতিত অন্য কোন দিন আপনি চাইলেও আড্ডা দেওয়ার মত সময় পাবেন না। যদিও সময় হয় কিন্তু ক্লান্ত থাকার কারনে সেটা করা সম্ভব হয় না।
- আপনার ভালো লাগা বা মন্দ লাগার উপর কোম্পানির কোন যায় আসে না। আপনাকে আপনার দ্বাতীয় পালন করতে হবে সেটা আপনি যে অবস্থায় থাকেন কেন।
- বছর শেষে বেতনের ২% থেকে ৫% ইনক্রিমেন্ট পাওয়া যায়।
- মাঝে মাঝে আপনাকে অফিস টাইমের বাইরেও কাজ করতে হবে।
- অফিসের প্রতিটি কাজের জন্য আপনি জবাব দিহিতা দিয়ে বাধ্য। আপনি কোন কাজ ভুল করলে তার জন্য বসের কাছে কথা শুনতে হবে।
- আপনি মার্কেটিং পার্যায়ে চাকরি করে থাকলে আপনাকে দেওয়া টারর্গেট পূরন করতে হবে।
- একজন চাকরি জীবি চাইলেও মুক্ত ভাবে কোন কাজ করতে পারে না।

ফেসবুক ভিডিও থেকে আয় করার উপায়
আমি বর্তমানে একজন ফুল টাইম ক্রিয়েটর এবং ফ্রিল্যান্সার। আমি ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আসার আগে ৩ বছর জব করেছি।
আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে যদি কেউ প্রশ্ন করে যে আপনি কোন পেশাটি সবথেকে বেশি ইনজয় করছেন তাহলে আমি বলব ফ্রিল্যান্সিং এবং চাকরি।
আমার দুইটি উত্তর হওয়া পিছনে বেসিক কিছু কারন আছে। দেখুন আপনি সফল ফ্রিল্যান্সার হতে পারলে অর্থিক ভাবে সচল হবে।
কিন্তু একজন ফ্রিল্যান্সার একা একা কাজ করার কারনে বন্ধু-বান্ধব এবং অত্নীয়-স্বজন থেকে দূরে সরে যায়। অন্যদিকে একজন চাকরি-জীবি দিন শেষে সবার খোজ খবর নিতে পারে।
ফ্রিল্যান্সারদের একটা পর্যায়ে প্রচুর লোভ সৃষ্টি হয় কারন চাহিদার অতিরিক্ত অর্থ আয় করার কারনে উচ্চভিলাসিতার সৃষ্টি হয়।
আমি বলব না যে, উচ্চভিলাসিতা খারাপ বিষয় কিন্তু সেটা মাত্রারিক্ত হয়ে গেলে সমস্যা। অন্য দিকে একজন চাকরি জীবি যত টুকু বেতন পায় তত টুকু দিয়ে নিজের প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করে।
যেমন, আমি বর্তমানে আমার অফিস টাইম আড্ডা ইত্যাদি বিষয় গুলো খুব মিছ করি। আবার ফ্রিল্যান্সিং পেশায় থাকার কারনে মুক্ত ভাবে চিন্তা ভাবনা করতে পারে।
আপনার জীবন আপনাকে বেছে নিতে হবে আপনি কি করবেন? আমি চাইলেও জোর করে আপনাকে একটি পেশায় নিয়োজিত করতে পারবো না। শুধু এত টুকু বলতে পারি আপনি যে পেশায় থাকেন অবশ্যই সততা এবং বিশ্বাসের সাথে কাজ করবেন সফল হবেন।
শেষ কথা
আপনাকে চাকরি বা ফ্রিল্যান্সিং করে জীবিকা নির্বাহ করতে হবে বিষয়টা এমন নয়। আপনি চাইলে অন্য যে কোন সত পথে ইনকাম করে জীবিকা ধারন করতে পারেন।
শুধু খেয়াল রাখতে হবে, আপনি যে সময় টুকু কাজের জন্য ব্যয় করছেন তার যথার্থ আউটপুট পাচ্ছেন কি না! হ্যাঁ, কোন কিছুর শুরুতে আপনি অনেক বেশি ইনকাম করতে পারবেন, তা কিন্তু নয়।
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আপনার ইনকাম বা আয় না বাড়লে আপনার পেশা পরির্বতন করা উচিত। আর একটি বিষয় হল সময় দিন, পরিশ্রম করুন সফল আপনি হবেন।
কখনো বোকার মত সময় ব্যয় করে কাজ করবেন না। যে কাজ করে আপনি রেজাল্ট পাবেন না সেই কাজের রেজাল্ট পাওয়া যায় এমন সমাধান খুঁজে বের করুন।
ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।
Click the above button to visit next page
You visited 1/10 pages