মোবাইল দিয়ে কি কি উপায়ে আয় করা যায়।
আপনি আমার লেখাটি পড়ছেন মোবাইলে। কিন্তু এই লেখাটি লিখেছি আমি কম্পিউটারে। কম্পিউটারে কোন কিছু কম্পোজ করা বা লেখা খুবেই সহজ।
আপনি গুগলে গিয়ে “মোবাইল দিয়ে আয় করার উপায়” লিখে সার্চ করলে হাজার হাজর লেখা পাবেন যেখানে মোবাইল দিয়ে আয় করার বিভিন্ন উপায় বলা হবে।
আমি আপনাকে মিথ্যা আশ্বাস দিব না, যে কাজ গুলো সত্যি সত্যি মোবাইল দিয়ে করা যায় সেই কাজ গুলো কথাই আপনার সাথে শেয়ার করব।
বর্তমানে সকল মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। তার মানে এই নয় যে আপনি সকল টাইপের মোবাইল দিয়ে আয় করতে পারবেন। আপনি যদি মোবাইল দিয়ে আয় করতে চান তাহলে আপনার ফোনটি অবশ্যই অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন হতে হবে।
আপনার ফোনটি অ্যান্ড্রয়েড না হলে আপনি আয় করতে পারবেন না। ধরে নিলাম আপনার ফোনটি অ্যান্ড্রয়েড এবং আপনি ইন্টারনেট সম্পর্কে ভালো ধরনা রাখেন।
কেন ধারনা করলাম এটার অবশ্য মানে আছে। আপনি এই পোষ্টটি পড়ছেন তার মানে আপনি জানেন কি ভাবে গুগলে সার্চ করতে হয়? আপনি গুগলে সার্চ করতে জানেন তার মানে আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে জানেন।
মোবাইল দিয়ে সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আয়
সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলোর এতো বেশি জনপ্রিয়তার কারন হল অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন। এই মোবাইল ফোন কে কাজে লাগিয়ে আপনি ইনকাম করতে পারবেন।
সোস্যাল মিডিয়া গুলো আপনার উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে কোটি কোটি অর্থ আয় করছে। এই প্লাটফর্ম গুলো আপনাকে সুযোগ করে দিচ্ছে অর্থ আয় করার।
সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলো থেকে দুই ভাবে আয় করা যায়। এক. সোস্যাল মিডিয়ায় আপনার ভিডিও এবং কন্টেন্ট মনিটাইজেশন করে। দুই. সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে আপনার জনপ্রিয়তা সৃষ্টি করার মাধ্যমে।
নোটঃ এক নং উপায় ব্যবহার করে সকল সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম থেকে আয় করা যায় না।
ফেসবুকঃ বাংলাদেশে বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারী সংখ্যা 44.7 মিলিয়ন। একজন বিজ্ঞাপন দাতা চাইলে অর্থ খরচ করে ৪৪.৭ মিলিয়ন বাংলাদেশী মানুষের কাছে তার পণ্যের প্রচার করতে পারবে।
এই ফেসবুককে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্দ্যোক্তা। আপনি চাইলে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে একজন উদ্দ্যোক্তা হতে পারেন।
কিভাবে ফেসবুকের মাধ্যমে নিজের ব্যবসা শুরু করবেন তার একটি চেক লিষ্ট তৈরি করা যাক।
ফেসবুক পেজ ওপেন করে ব্যবসাঃ আপনি আপনার ফেসবুক প্রোফাইলের মাধ্যমে ব্যবসা করতে পারবেন না। ফেসবুকে ব্যবসা করতে হল আপনার একটি ফেসবুক পেজ থাকতে হবে। ফেসবুক পেজ কিভাবে তৈরি করে তা ইউটিউব থেকে জেনে নিতে হবে।
ফেসবুকে প্রবেশ করার পর বাম দিকে Pages লেখা দেখতে পাবেন। সেই পেজেজ লেখায় ক্লিক করে বিজনেস পেজ তৈরি করতে পারবেন।

ফেসবুকে আপনি যে কোন ধরনের ব্যবসা করার জন্য প্রথম থেকে চিন্তা করে সব কিছু করতে হবে। যেমন, পেজের নাম, বর্ননা, পেজ লোগো, পেজ কাভার পেজ, ইত্যাদি।
পেজের ফলোয়ার বৃদ্ধি করার জন্য প্রতিদিন ২ টা হতে ৩ তা পোষ্ট করতে হবে। এবং পোষ্ট গুলো যেন আপনার ব্যবসার ধরন অনুযায়ি হয়।
নোটঃ ফেসবুক ব্যবসা এক দিনে তৈরি হয় না, অনেক সময় লাগে। তবে একবার জনপ্রিয়তা পেয়ে গেলে ভালো ব্যবসা করা যায়।
পেজে কি পোষ্ট করবেন সেই বিষয়ে ধারনা দেওয়া যাক।
ধরুন আপনি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ঘর ডেকোরেশনের পন্য বিক্রয় করতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনার পোষ্ট গুলো যে সেই রিলেটেড হয়।
প্রথম দিকের পোষ্ট গুলো এমন হতে পারে। যেমন, কোন কোন পন্য গুলো ঘর ডিজাইন করার জন্য ভালো, কোন পন্যটি কিভাবে তৈরি, কোথায় পাওয়া যায়, ইত্যাদি।
আপনি আজ পেজ খুলে কালকে থেকে পন্য বিক্রয় করতে চাইলে হবে না। আপনাকে প্রথমে মানুষের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে হবে। আপনার উপর মানুষের বিশ্বাস সৃষ্টি করতে হবে।
একটা সময় যাওয়ার পর আপনি নিজের পেজ থেকে পন্য বিক্রি করতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে আপনার লক্ষ ঠিক রেখে ধৈর্য্য ধরে কাজ করতে হবে।
এবং উপরে বর্ননা করা প্রতিটি কাজ একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন দিয়ে করতে পারবেন। নিচের ছবিটি দেখুন বিষয় গুলো ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন।

মোবাইল দিয়ে ইন্সটাগ্রামে ব্যবসা
নিজের জনপ্রিয়তা তৈরি করে ইন্সটাগ্রাম থেকে অর্থ ইনকাম করা সম্ভব। ইন্সটাগ্রামে নিজের ছবি, ভিডিও বা অন্য কোন কাজ শেয়ার করে মানুষের সাথে নিজের যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে।
অনেক গুলো ইন্সটাগ্রাম ইউজার আপনার প্রোফাইল কে ফলো করলে আপনি তার বেনিফিট নিতে পারবেন। কিন্তু বিষয়টা হল ইন্সটাগ্রামে ফলোয়ার বৃদ্ধি করাটা সহজ নয়।
আপনাকে প্রতিদিন ছবি , ভিডিও শেয়ার করতে হবে। জানতে হবে কি কি হ্যাশ ট্যাগ ব্যবহার করতে হবে। মানুষ আপনাকে ফলো করে এমন কিছু করতে হবে।
আপনি চাইলে নিজের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি ব্যতিত ইন্সটাগ্রামে ব্যবসা করতে পারবেন। সেই ক্ষেত্রে নিদিষ্ট একটি বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে।
ধরুন, প্রথম থেকে আপনি ইন্সটাগ্রামে বিভিন্ন ডিজাইনার সারির ছবি শেয়ার করা শুরু করলেন। এখন ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারীদের মধ্যে যারা সারি পছন্দ করে তারা আপনার প্রোফাইল ফলো করবে।
আপনার ফলোয়ার সংখ্যায় অনেক হয়ে যারা পর আপনি নিজে সারি বিক্রি করতে পারবেন। সেই একই কথা আবার প্রথম অবস্থায় আপনি ব্যবসা করতে পারবেন না।
প্রথমে আপনাকে নিজের প্রোফাইলের গ্রহনযোগ্যতা বাড়াতে হবে। আপনি চাইলে ফেসবুক এবং ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং নিয়ে কোর্স করতে পারেন।
এই ধরনের কোর্স গুলো আপনাকে সহযোগিতা করবে কি কি পদক্ষেপ নিবেন এবং কিভাবে নিবেন।
নিচের ছবিটি লক্ষ করুন। কিভাবে ইন্সটাগ্রাম থেকে আয় করা যায় সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

মোবাইল ফটোগ্রাফি
স্মার্ট ফোনের সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের ফটো তুলে বিক্রি/ফটো প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করে ইনকাম করতে পারেন।
কিন্তু এই বিষয়ে আমার কিছু সাজেশন আছে। মোবাইল ফটোগ্রাফির উপর একটি কোর্স করুন। এই কোর্সটি আপনাকে সহযোগিতা করবে আপনার মোবাইল ফোনের ক্যামেরা সম্পর্কে জানতে।

সেই সাথে আপনি জানতে পারবেন কিভাবে মোবাইল ফোন দিয়ে সুন্দর সুন্দর ফটো তোলা যায়। মনে রাখবেন, আপনি যে কাজেই করুন সেটা অবশ্যই প্রফেশনাল হতে হবে।
Smartphone General Photo Contest
একটি ফটো কনটেস্ট জিতে গেলে ৪,০০০ হাজার ডলার থেকে ১০,০০০ হাজার ডলার পুরস্কার পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে এই পুরস্কার অর্থ আরও বেশি হয়।
নোটঃ অনেক ব্যক্তি আপনাকে বলবে মোবাইল ফোন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং, ইউটিউবিং, ডাটা এন্ট্রি ইত্যদি কাজ করতে। কিন্তু সত্য বিষয়টি হল মোবাইল ফোন দিয়ে ইউটিউবিং করা যেতে পারে। ফ্রিল্যান্সিং রিলেটেড অন্য কাজ গুলো আপনি মোবাইল ফোন দিয়ে করতে পারবেন না।
ইউটিউবিং মোবাইল ফোন দিয়ে করতে গেলে সর্বপ্রথম যে সমস্যার সৃষ্টি হয় তাহল এডিটিং। ভালো ভিডিও এডিটিং ছারা ইউটিউবিং করে সফল হওয়াটা সহজ নয়।
বি:দ্রঃ মোবাইল অ্যাপ দিয়ে ইনকাম করার বিষয়টি আমি সাপোর্ট করি না। অর্থ ইনকাম করার ফেক মোবাইল অ্যাপ চেনার উপায় ।
মোবাইল দিয়ে ইউটিউব শর্ট
ইউটিউব কোম্পানি টিকটককের সাথে প্রতিযোগিতা মূলক ইউটিউব শর্ট ভিডিও অপশন চালু করেছে। মোবাইল ফোন দিয়ে সুন্দর সুন্দর শর্ট ভিডিও তৈরি করে আপলেডি দিতে পারেন।
ইউটিউব প্রায় প্রতিদিন ১০০০ শর্ট ভিডিও ক্রিয়েটরকে একটি রিওয়ার্ড প্রোগ্রামের মধ্যে নিয়ে আসেন। ইউটিউব শর্টের শর্ত গুলো পূরন করতে পারলে আপনি সেই রিওয়ার্ড প্রোগ্রামে প্রবেশ করতে পারবেন। এই রিওয়ার্ড মানি ১০০ ডলার থেকে ১০,০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে Chat করে অর্থ আয়ঃ বিষয়টি প্রথম বারের মত জেনে থাকলে আপনার আবাক লাগতে পারে। কিন্তু এই সত্য। বর্তমান পৃথিবীতে মানুষ এতো বেশি ব্যস্ত যে নিজের প্রিয়জনের সাথে কথা বলার টাইম নেই।
কিন্তু এই পৃথিবীতে এমন কিছু লোক আছে যাদের কথা বলার মত লোক নেই। এই লোক গুলো কথা বলার জন্য বন্ধু খুঁজে। যারা তাদের মনের কথা শুনবে তাদের গুরুত্ব দিবে এমন সব লোক।
বিষয়টি অযৈক্তিক এবং অমানবিক মনে হলেও এটাই সত্য। আপনি কারো সাথে কথা বলবেন এবং তিনি আপনাকে পেমেন্ট করবে।
নিচের দেওয়া লিংক গুলো ট্রাই করতে পারেন।
মোবাইল ইউজার টেষ্টার ( UserTesting Jobs )
আমি একটি বিজনেস অ্যাপ বা ওয়েবসাইট তৈরি করলাম। আমার কাছে আমার অ্যাপটি খুবেই ভালো আমি তেমন কোন সমস্যা দেখছি না। কিন্তু আপনি আমার অ্যাপটি ব্যবহার করা শুরু করলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আপনি দেখতে পাবেন যা আমি দেখতে পাচ্ছি না।

কারন প্রতিটি মানুষ তাদের ব্যবহারের সুবিধা অনুযায়ি অ্যাপটির মধ্যে কিছু বিষয় নেই মনে করবে। যা আমি খেয়াল করি নাই।
আপনি আমার অ্যাপটির যে সকল সমস্যা দেখতে পাবেন তা পরর্বতীতে আমি আমার ডেভলোপার দ্বারা ঠিক করে নিবো।
এই যে আপনি আমার অ্যাপটি ভিজিট বা ব্যবহার করে একটি রিভিউ দিবেন এটাই হলো একজন ইউজার টেষ্টারের কাজ।
কিন্তু আমি আমার অ্যাপটি একজনের কাছে নয় হাজার মানুষ দ্বারা টেষ্ট করাতে চাই। দুই বা এক জন হলে সেটা বন্ধু বা বান্ধব দিয়ে করা যায়। কিন্তু হাজার মানুষ দিয়ে টেষ্ট করার জন্য কোন এজেন্সিকে হায়ার করতে হবে।
Usertesting এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে হাজার হাজার টেষ্টার আছে যারা অ্যাপ রিভিউ করে থাকে। আপনি একজন টেষ্টার হতে চাইলে Usertesting ওয়েবসাইটে জয়েন করতে হবে।
টেষ্টার হতে চাইলে যা যা লাগবে
- মোবাইল বা কম্পিউটার।
- ইন্টারনেট কানেকশন। ( নেট কানেকশন স্প্রিড 3MBps )
- মাইক্রোফোন
- আপনার বয়স ১৮ বছর হতে হবে।
- আপনাকে ইংরেজী কথা বলা জানতে হবে।
ইমেইল অ্যাড্রেস দিয়ে জয়েন করতে হবে। প্রথমে আপনার একটি টেষ্ট নেওয়া হবে। আপনি টেষ্টে পাস করলে আপনাকে কাজ দেওয়া হবে।
প্রতি ৫ মিনিট একটি অ্যাপ বা ওয়েবসাইট রিভিউ করার জন্য ৪ ডলার পেমেন্ট করা হয়ে থাকে। আপনি যদি লাইভ ইন্টারভিউ দিয়ে কোন অ্যাপ বা ওয়েবসাইট রিভিউ করেন সেই ক্ষেত্রে ৩০ থেকে ১২০ ডলার পর্যন্ত পেমেন্ট করা হয়ে থাকে।
আপনি পেপালের মাধ্যমে আয়কৃত অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন।
বি.দ্রঃ আপনি এই ধরনের ওয়েবসাইট গুলো থেকে নিয়মিত কাজ পাবেন এর কোন ধরনের নিশ্চয়তা নেই। হয়তো কোন মাসে ৪টি কাজ পেলেন আবার কোন মাসে কোন কাজেই নেই।
Related Website For UserTesting
শেষ কথা
আপনি অনলাইনে থেকে ইনকাম করতে চাইলে মোবাইল ফোন দিয়ে অনেক কাজ সহজে করতে পারবেন না। ধরুন, আপনি ফেসবুকে একটি স্টোর ওপেন করলেন।
যার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ধরনের পন্য বিক্রয় করবেন। পন্যের বিবরন থেকে শুরু করে সকল কাজ আপনাকে মোবাইলে করতে হবে, যা কষ্ট সাধ্য।
যেমন আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করার কথা চিন্তা করেন তাহলে সেটা মোবাইল ফোন দিয়ে সম্ভব নয়। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনাকে ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ক্রয় করতে হবে।
যা হোক অনলাইন থেকে আয় করার দুইটি অপশন
১. ব্যবসা করে ইনকাম করা
২. ফ্রিল্যান্সিং করে আয়।
এর বাইরে কোন উপায়ে আয় করতে চাইলে সেটা হবে ক্রিয়েটর। যেমন ইউটিউব চ্যানেল, ব্লগিং, সোস্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ইত্যাদি।
আশা করছি আপনি আমার বলা কথা গুলো বুঝতে পেরেছেন। এর পরেও যদি কোন কিছু জানার থাকে তাহলে আমাদের সাথে কন্ট্রাক পেজের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন।
Click the above button to visit next page
You visited 1/10 pages